About Us

হাজী তৈয়ব আলী মহিলা আলিম (প্রস্তাবিত) মাদ্রাসা

জকিগঞ্জ, সিলেট এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
প্রতিষ্ঠাতা: জনাব মোশ্তাক আহমদ, পিতা: জনাব হাজী তৈয়ব আলী রহ.

ভূমিকা: মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- প্রত্যেক নর-নারীর জন্য জ্ঞান অর্জন করা ফরজ। (ইবনে মাজাহ)

নেপোলিয়ন বোনাপার্ট বলেছিলেন-

Give me an educated mother, I shall promise you the birth of a civilized nation.

ইসলামের শ্বাশত বাণী ও জগদ্বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গের উক্তির মাধ্যমে আশরাফুল মাখলুকাত মানুষকে জ্ঞানার্জনের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র পুরুষকে আলাদাভাবে জ্ঞানার্জনের নির্দেশ দেয়া হয়নি বরং পাশাপাশি নারীদেরকেও দেয়া হয়েছে। কারণ একজন শিক্ষিত মা একটি আর্দশ সমাজ ও আর্দশ জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। শিক্ষিত মা মানেই শিক্ষিত সন্তান, শিক্ষিত সন্তান মানে উন্নত নাগরিক, উন্নত জাতি। তাই নারীদেরকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলা একান্ত আবশ্যক। বর্তমান বিশ্বে শিক্ষা-সংস্কৃতি ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে নারীদের ভূমিকা প্রশংসনীয়। নারীদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে তাদেরকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে নারী শিক্ষার প্রসার ও অগ্রগতির মহৎ লক্ষ্য নিয়ে ০১/০১/১৯৮৬ সালে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলা নিকেতন সিলেট জেলাধীন জকিগঞ্জ উপজেলার হাজী তৈয়ব আলী বালিকা দাখিল (বর্তমানে প্রস্তাবিত আলিম) মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে মাদ্রাসাটি এতদাঞ্চলের মেয়েদের সুশিক্ষিত ও আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার সুদৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে অবিরত।

নামঃ হাজী তৈয়ব আলী বালিকা দাখিল মাদ্রাসা। বর্তমানে হাজী তৈয়ব আলী মহিলা আলিম (প্রস্তাবিত) মাদ্রাসা শীর্ষক নামে সুপরিচিত।

অবস্থানঃ সিলেট জেলার জকিগঞ্জ উপজেলাধীন ৬ নং সুলতানপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের (গঙ্গাজল) নোয়াগ্রামে অবস্থিত। জকিগঞ্জ-সিলেট মেইন রোডের পার্শেই মাদ্রাসার মেইন ফটক।

প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যঃ একবিংশ শতাব্দীর এই অগ্রগতির যুগেও আমাদের দেশের অধিকাংশ নারী উচ্চ শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। জার্মান শিক্ষাবিদ নিপোলিয়ন বোনাপার্ট বলেছিলেন-
“আমাকে একজন শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাদেরকে একটি শিক্ষিত জাতি উপহার দেব”।

তাঁর এই চিরস্মরণীয় কথার প্রতিধ্বনি আজ বিশ্বব্যাপী অনুরণিত হচ্ছে। শিক্ষিত মা মানেই শিক্ষিত জাতি। একজন মা শিক্ষিত না হলে জাতির ভবিষ্যৎ অন্ধকার। কেননা আজকের শিশুই আগামী দিনের জাতির কর্ণধার। তাই একটি আর্দশ সমাজ বিনির্মাণে নারীদের শিক্ষিত, সচেতন, স¦াবলম্বি ও নৈতিকতা সম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার উদ্দেশ্যেই সিলেট জেলাধীন জকিগঞ্জ উপজেলার অন্তর্গত ৬নং সুলতানপুর ইউনিয়নের সহিদাবাদ গ্রামের বিশিষ্ট দানশীল ও সর্বজন শ্রদ্ধেয় সালিশ ব্যক্তিত্ব জনাব আলহাজ্ব মোহাম্মদ তৈয়ব আলী রহ. এর সুযোগ্য সন্তান জনাব মোশ্তাক আহমদ সাহেব (কানাডা প্রবাসী) ও মরহুম জনাব মোহাম্মদ আব্দুল হালিম (হালন মিয়া সাহেব)

তাঁদের মরহুম শ্রদ্ধেয় পিতার স্মৃতিকে স্মরণীয় ও বরণীয় করে রাখার মহৎ উদ্দেশ্যে পিতার নামে নামকরণ করে হাজী তৈয়ব আলী বালিকা দাখিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে তাঁদের অপর দুইভাই ১. জনাব মাস্টার মো. আব্দুল কাইয়ুম ও ২. জনাব মো. আলতাফ আহমদ মাদ্রাসার সার্বিক সহযোগিতায় গুরুত্বপুর্ণ অবদান রাখেন। বর্তমানে মাদ্রাসাটি হাজী তৈয়ব আলী মহিলা আলিম (প্রস্তাবিত) মাদ্রাসা নামে পরিচিত।

কারিকুলামঃ বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত সিলেবাস ও কারিকুলাম অনুস্বরণে অত্র মাদ্রাসা পরিচালিত হয়। ইবতেদায়ী (প্রাথমিক) স্তর ৫ বছর, দাখিল (মাধ্যমিক) স্তর ৫ বছর, আলিম (উচ্চ মাধ্যমিক) স্তর ২ বছর, ফাযিল (ডিগ্রি) স্তর ৩ বছর ও কামিল (স্নাতকোত্তর) স্তর ২ বছর সহ মোট ১৭ বছরে এ কারিকুলাম পুর্ণাঙ্গ রূপে বিন্যস্ত। আমাদের অত্র হাজী তৈয়ব আলী মহিলা আলিম মাদ্রাসায় আলিম জামাত পর্যন্ত ক্লাস পরিচালিত হয়। বাংলা, ইংরেজি ও আরবি মাধ্যমে শিক্ষা দেয়া হয়। দাখিল শাখা ২০০৪ সালের মে মাসে এমপিওভূক্ত হয়েছে এবং আলিম শাখা পাঠদানের অনুমতি / স্বীকৃতি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

ইউনিফর্মঃ মাদ্রাসায় ইবতেদায়ী ১ম থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত সহ শিক্ষা চালু রয়েছে। ছাত্রদের ফার্নগ্রীণ কালার পাঞ্জাবী-পায়জামা ও সাদা টুপি এবং মেয়েদের ফ্রগ ও বোরকার রং ফার্নগ্রীণ এবং পেস্ট কালার উড়না।

শ্রেণি ও শিক্ষার্থীর সংখ্যাঃ ইবতেদায়ী ১ম থেকে দাখিল দশম শ্রেণি পর্যন্ত ১০টি ক্লাস এবং ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ থেকে আলিম (ইন্টারমিডিয়েট) শ্রেণি চালু করা হয়েছে। বর্তমানে ১২ টি শ্রেণি এবং প্রায় চারশত শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছে।

স্টাফঃ অত্র মাদ্রাসায় ১২ জন শিক্ষক ও একজন আয়াসহ মোট ৫ জন কর্মচারী আছেন। বর্তমানে কর্মরত শিক্ষক/কর্মচারীবৃন্দের নাম ও পদবী নিম্নরূপঃ

ক্রমিক নাম পদবী
০১ মোহাম্মদ জামিল আহমদ সুপারিনটেনডেন্ট
০২ মোঃ হাবিবুল্লাহ বাহার সহঃ মৌলভী
০৩ মোঃ আব্দুর রকিব সহঃ মৌলভী
০৪ মোঃ আব্দুল জলিল সহঃ শিক্ষক (ইংরেজি)
০৫ রুহেনা বেগম সহঃ শিক্ষক (সামাজিক বিজ্ঞান)
০৬ মোঃ এনামুল হাসান সহঃ শিক্ষক (কৃষি শিক্ষা)
০৭ আবু হানিফ সহঃ শিক্ষক (গনিত)
০৮ রজত অধিকারী সহঃ শিক্ষক (বাংলা)
০৯ মোঃ আব্দুর রকিব ইবঃ প্রধান
১০ মোঃ আব্দুল লতিফ ইবঃ জুনিয়র মৌলভী
১১ মোঃ মোছলেহ কাইয়ুম ইবঃ জুনিয়র শিক্ষক
১২ মোঃ আব্দুল কাদির ইবঃ ক্বারী
১৩ মোঃ আবুল কালাম আজাদ অফিস সহকারী
১৪ ছায়েম আহমদ এমএলএসএস
১৫ আঙ্গুরুন নেছা আয়া
১৬ মোঃ জালাল উদ্দিন নৈশ প্রহরী
১৭ ছাদিক আহমদ নিরাপত্তা কর্মী

শ্রেণি কার্যক্রমঃ সকাল ১০ টা থেকে ১০.২০ পর্যন্ত এসেম্বলী এবং ১০.২১ থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ৪র্থ ঘন্টার পর যোহরের নামাজ আদায় করা হয়। নামাজ ও টিফিনের জন্য রয়েছে বিরতি।

সভা/সেমিনারঃ ধর্মীয়/সরকারী জাতীয় দিবস সমূহ অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে পালন করা হয়। বিশেষ করে প্রতি বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে কুরআন শরীফ তেলাওয়াত, প্রবন্ধ পাঠ, কবিতা আবৃত্তি, বাংলা, ইংরেজি, আরবীতে বক্তৃতা উপস্থাপন ও সমসাময়িক বিষয়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষার্থীদের মেধা ও সুপ্ত প্রতিভা বিকাশে সাপ্তাহিক সভা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।

মিশু-মোশ্তাক ডিজিটাল লাইব্রেরিঃ মাদ্রাসা শিক্ষা নিছক কোন ধর্মীয় শিক্ষা নয় বরং শিক্ষার্থীদের দ্বীন শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি, বৃত্তিমুলক, ব্যবহারিক জ্ঞান-বিজ্ঞানসহ প্রযুক্তিমুখী শিক্ষায় পারদর্শী করা এবং একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দক্ষ, যোগ্য ও আদর্শ সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার মহৎ উদ্দেশ্যে অত্র মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা বিশিষ্ট্য শিক্ষানুরাগী, সমাজ হিতৈষী জনাব মোশ্তাক আহমদ (কানাডা প্রবাসী) স্ব-প্রনোদিত হয়ে প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে অত্র হাজী তৈয়ব আলী মহিলা আলিম (প্রস্তাবিত) মাদ্রাসায় মিশু-মোশ্তাক ডিজিটাল লাইব্রেরি এন্ড অডিটোরিয়াম ভবন নির্মাণ করেন। দ্বিতলা বিশিষ্ট্য সুরম্য এ ভবনটি নির্মাণের ফলে অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি মাদ্রাসার সৌন্দর্য বহুলাংশে বৃদ্ধি করেছে। এতে অত্যাধুনিক ও সমৃদ্ধ একটি ডিজিটাল লাইব্রেরি, ডিজিটাল অডিটোরিয়াম ও সু- সজ্জিত কম্পিউটার ল্যাব রয়েছে। এখানে শিক্ষার্থীরা বিনামুল্যে কম্পিউটার বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার সু ব্যবস্থা রয়েছে।

ম্যানেজিং কমিটিঃ অত্র মাদ্রাসায় বিধি মোতাবেক মাদ্রাসা বোর্ড অনুমোদিত ম্যানেজিং কমিটি রয়েছে। বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সদস্য সংখ্যা ১১ জন। কমিটির সদস্যবৃন্দের নাম ও পদবী নিম্নরূপ :

ক্রমিক নাম পদবী
০১ মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন খালেদ সভাপতি
০২ মোহাম্মদ জামিল আহমদ সদস্য সচিব
০৩ মোশতাক আহমদ প্রতিষ্ঠাতা সদস্য
০৪ মোঃ হাবিবুর রহমান অভিভাবক সদস্য
০৫ মোঃ আব্দুল হান্নান অভিভাবক সদস্য
০৬ মোঃ ফখরুল ইসলাম অভিভাবক সদস্য
০৭ জাহানারা বেগম সংরক্ষিত মহিলা অভিভাবক সদস্য
০৮ মোঃ হাবিবুল্লাহ বাহার সাধারণ শিক্ষক সদস্য
০৯ মোঃ মোছলেহ কাইয়ুম সাধারণ শিক্ষক সদস্য
১০ মোঃ আব্দুস সোবহান বিদ্যুৎসাহী সদস্য
১১ আহমদ মনসুর আলম দাতা সদস্য

উল্লেখ্য যে,অত্র মাদ্রাসা ০১/০১/১৯৮৬ ঈসায়ী সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে মাদ্রাসার উন্নয়নে এলাকার অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ জড়িত ছিলেন এবং ঐ সকল মহান ব্যক্তিবর্গ অদ্যাবধি নিঃস্বার্থভাবে শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন। মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার পর থেকে যে সকল ব্যক্তিবর্গ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তাঁদের
নাম, ঠিকানা,পদবী ও কর্মকাল নিম্নরূপ ঃ

ক্রমিক

              নাম ঠিকানা পদবী

কর্মকাল

হইতে

পর্যন্ত

০১ জনাব মাওলানা মো. আব্দুল কাইয়ুম সহিদাবাদ সভাপতি ০১/০১/১৯৮৬ ইং ২৬/১১/১৯৯৩ ইং
০২ জনাব মো.নঈম উদ্দিন (নোমান মিয়া) গঙ্গাজল সভাপতি ২৭/১১/১৯৯৩ ইং ১৭/১১/১৯৯৭ইং
০৩ জনাব মো. আব্দুল খালিক হাজারীচক সভাপতি ১৮/১১/১৯৯৭ ইং ২১/০৯/২০০৮ ইং
০৪ জনাব মাওলানা মো. খলিলুর রহমান উত্তর গঙ্গাজল সভাপতি ২২/০৯/২০০৮ ইং ১৪/১০/২০১৬ ইং
০৫ জনাব মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন খালেদ গঙ্গাজল সভাপতি ১৫/১২/২০১৬ ইং

বাগানঃ মাদ্রাসায় বিদ্যমান ৩টি ভবনের সম্মুখে ৩ ফুট প্রশস্থ আইল্যান্ডের ভেতর নয়নাভিরাম ফুলের বাগান রয়েছে। বাগানে রয়েছে বিভিন্ন জাতের ফুলের গাছ। ফুলের সৌন্দর্য যে কাউকে মুগ্ধ করে। মাদ্রাসার পুরো ক্যাম্পাসে বিরাজমান রয়েছে শিক্ষার্থী বান্ধব বিউটিফুল পরিবেশ।

বিনোদনঃ শিক্ষার্থীদের চিত্ত বিনোদনের জন্য রয়েছে খেলাধুলার সরঞ্জামাদির ব্যাপক সমাহার। ছোট বড় দোলনা, মটর বাইক স্লাইডার ও স্লিপারগুলো শিশুদের চিত্ত বিনোদনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

অর্জনঃ মাদ্রাসাটি প্রতি বছরই পাবলিক পরীক্ষায় সন্তেুাষজনক ফলাফল অর্জন করে থাকে। বর্তমানে শিক্ষকন্ডলী, সম্মানিত অভিভাবকবৃন্দ ও শিক্ষার্থীদের একই প্লাটফর্মে চলে আসায় মাদ্রাসার লেখাপড়ার গুণগত মান বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে এবং দ্রুত গতিতে উন্নতি ও সমৃদ্ধির পানে এগিয়ে চলছে। সম্ভাবনাময় এ প্রতিষ্টানটি দ্রুতই তার অভিষ্ট্য লক্ষ্যে পৌছাবে ইনশাআল্লাহ।

মাদ্রাসার অর্জনঃ
১. ইসলামি মূল্যবোধ ও আধুনিকতার সমন্বয়ে মেয়েদের অনুকুল পরিবেশে থেকে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের লক্ষ্যে বিগত ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ থেকে অত্র প্রতিষ্ঠানে আলিম শ্রেণি চালু করা হয়েছে। বর্তমানে আলিম ২য় বর্ষে ৩৭ জন এবং প্রথম বর্ষে ৩৩ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছে।

২. জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ-২০২২ উপলক্ষে উপজেলা পর্যায়ে অত্র হাজী তৈয়ব আলী মহিলা আলিম মাদ্রাসা শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত হয়ে সম্মাননা স্মারক লাভ করেছে।

৩. মাদ্রাসাটির অর্জন এখানেই শেষ নয়, বরং ২০২২ সালের দাখিল পাবলিক পরীক্ষায় অত্র মাদ্রাসা জকিগঞ্জ উপজেলার মাদ্রাসা সমুহের মধ্যে পাশের দিক থেকে ১ম স্থান অর্জন করেছে। কৃতিত্বপূর্ণ এ ফলাফলের দ্বারা অক্ষুন্ন রাখতে শিক্ষকমন্ডলী ও শিক্ষার্থীবৃন্দ বদ্ধপরিকর।

সুযোগ-সুবিধাঃ
১. বর্তমান যুগ তথ্য প্রযুক্তি ও কম্পিউটারের যুগ। শিক্ষার্থীদের যুগোপযোগি ও স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা জনাব মোশ্তাক আহমদ এর উদ্যোগ ও অর্থায়নে মাদ্রাসায় একটি কম্পিউটার ল্যাব চালু হয়েছে এবং শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ল্যাবে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৩০ জন শিক্ষার্থী কম্পিউটার শিক্ষায় দক্ষতা অর্জন করেছে। পর্যায়ক্রমে দাখিল ৬ষ্ট থেকে আলিম শ্রেণি পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

২. শিক্ষার্থীদের ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজ (ইংরেজি ও আরবি ভাষায়) দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এক্সট্রা কেয়ার বা বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হয়। বিশেষত: মহাগ্রন্থ আল কুরআনের উপর জ্ঞানার্জন ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষে প্রতিষ্ঠাতা জনাব মোশ্তাক আহমদ এর পক্ষ থেকে ‘উরওয়াতুল উসকা’ শীর্ষক প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা রয়েছে এবং নির্বাচিত প্রতিযোগিদের পুরস্কৃত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

৩. অত্র মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের শুধু বোর্ড পরীক্ষায় ভালো ফলাফল-ই নয় বরং এর বাহিরেও দুনিয়ার ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার লক্ষ্যে একটি ডিজিটাল লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করা হয়ছে।এখানে দেশে-বিদেশের শিক্ষাবিদ, চিন্তাবিদ ও গুনীজনের লিখিত বই-পুস্তক আছে। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের চিন্তা-চেতনা ও সৃজনশীল মনন গড়ে তুলতে এবং মাদ্রাসার অগ্রগতির ক্ষেত্রে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।

একটি মানসম্মত অডিটোরিয়াম প্রতিষ্ঠানের গুণগত মান বহুলাংশে বৃদ্ধি করে থাকে। এখানে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা,সভা-সেমিনার, সিম্পোজিয়ামের মাধ্যমে তাদের শারীরিক ব্যায়াম ও মানসিক বুদ্ধিবৃত্তির বিকাশ ঘটাতে পারবে।

আমরা অত্যন্ত আশান্বিত যে, শীঘ্রই আমাদের নিজস্ব ল্যাবের সাথে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত রূপকল্প-২০২১ এর আওতাধীন ‘শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব’ যুক্ত হচ্ছে। এটি বাস্তবায়িত হলে শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি,শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আইসিটির ক্ষেত্রে আগ্রহী করে তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাঃ অত্র হাজী তৈয়ব আলী বালিকা দাখিল মাদ্রাসা বর্তমানে প্রস্তাবিত হাজী তৈয়ব আলী মহিলা আলিম মাদ্রাসা পর্যায়ক্রমে আলিম (ইন্টারমিডিয়েট), ফাজিল (ডিগ্রি) ও কামিল (মাস্টার্স) পর্যায়ে উন্নীত করা এবং দাখিল ও আলিম পর্যায়ে বিজ্ঞান শাখা চালু করা। শিক্ষার্থীদের ইসলাম, আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সমন্বয়ে প্রণীত কল্যাণমুখী শিক্ষার মাধ্যমে মেয়েদের সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করে তাদের স্বাবলম্বী, সচেতন ও আত্মমর্যাদা সম্পন্ন দক্ষ মানব সম্পদ হিসেবে গড়ে তোলা। পাশাপাশি তাদের সম্মান,মর্যাদা, সামাজিক নিরাপত্তা ও অধিকারকে সমুন্নত রেখে নারীদের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে জাতীয় জীবনে টেকসই উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা পালন করা। আমাদের অগ্রযাত্রায় সম্মানিত অভিভাবক, শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, সমাজসেবক ও উদ্যোক্তা মহলের সুচিন্তিত মতামত, পরামর্শ ও সর্বাত্বক সহযোগিতা কামনা করছি।

মোহাম্মদ জামিল আহমদ
Email: jamilzfs@gmail.com

Back to top button